উত্ত্যক্ত করায় খুন হন নোয়াখালীর চা দোকানি শাহ আলম

উত্ত্যক্ত করায় নোয়াখালীর চাটখিলের মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কুলশ্রী গ্রামের চা দোকানদার শাহ আলমকে খুন করেছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামী।

বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারকৃত ইয়াছমিন ও শান্ত নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শোয়েব উদ্দিন খান ও মুশফিকুল হক’র আদালতে ফৌজধারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মুঠোফোনের কলের সূত্র ধরে কুলশ্রী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শাহ আলম’র স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার (৩৮) ও তার ছেলে ইয়াছির আরাফাত শান্তকে (১৯) গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার বিকালে নোয়াখালী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন তার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

পুলিশ সুপার জানান, আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের চিহ্নিত করি। একই সাথে হত্যার সাথে সম্পৃক্ত লাঠিটিও উদ্ধার করি।

তিনি আরও জানান, নিহতের মেয়ে শারমিন আক্তার সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার রাতে নিহত শাহ আলমের মোবাইলে একাধিকবার কল আসে। এর কিছুক্ষণ পর তিনি ঘরের দরজা বাহির থেকে লাগিয়ে দিয়ে চলে যান। পরে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তিনি আর বাড়িতে ফিরেন নি। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রযুক্তি সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইয়াছমিন আক্তারও তার ছেলে ইয়াছির আরাফাত শান্তকে (১৯) বুধবার রাত ১১টার দিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীতে আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছমিন আক্তার জানায়, নিহত শাহ আলম মোবাইলে ফোন দিয়ে প্রায় তাকে বিরক্ত করত এবং গভীর রাতে বসত ঘরের দরজা জানালায় টোকা দিত। এ বিষয়ে ইয়াছমিনের ছেলে ভিকটিম শাহ আলমকে মুঠোফোনে শাসিয়ে দিলেও শাহ আলম ইয়াছমিনকে উত্ত্যক্ত অব্যাহত রাখে। পরে ইয়াছমিন তার ছেলে শান্ত’র সাথে আলাপ করে শাহ আলমকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়াছমিন মঙ্গলবার রাত একটার দিকে মোবাইল ফোনে শাহ আলমকে তার বাসায় ডাকে।

এ সময় ইয়াছমিনের ছেলে এবং তার বন্ধুরা শাহ আলমের যাওয়ার পথে ওঁৎ পেতে থাকে। ইয়াছমিনের ফোন পেয়ে ভিকটিম শাহ আলম ইয়াছমিনের বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে কুলশ্রী গ্রামের আবুল কালামের দোকানের সামনে আসলে, ইয়াছমিনের ছেলে শান্ত ও তার বন্ধু শাহ আলমকে আটক করে, দোকান ঘরের পিছনে নিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক ইয়াছমিনের ছেলে শান্ত ও তার এক বন্ধু মিলে কাঠের টুকরা দিয়ে শাহ আলমের ঘাঁড়ে আঘাত করে। পরে শাহ আলম উপুড় হয়ে পড়ে গেলে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

আরও পড়ুন...

নোয়াখালীতে ঘর থেকে বের হওয়ার ১২ ঘণ্টার পর মিলল ক্ষতবিক্ষত লাশ

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ